শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ০২:৩৫ পূর্বাহ্ন
মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়ের প্রকাশিত রাজাকারের তালিকা নিয়ে এরইমাঝে বেশ সমালোচনার ঝড় বইছে। বিশেষ করে বরিশালে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের নাম প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় দেখতে পেয়ে বেশ অবাক হয়েছেন স্বজনরা।
এরইমধ্যে রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধাদের নাম আসায় বরিশালে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ। যদিও সময় যতো যাচ্ছে তালিকা ধরে ততো নতুন নতুন তথ্য আসছে, যা বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। এরইমধ্যে তালিকায় বঙ্গবন্ধুর বেয়াই মরহুম আব্দুল হাই সেরনিয়াবাতের নাম দেখে অবাক হয়েছেন তার উত্তরসূরিরা।
সদ্য প্রকাশিত রাজাকারের তালিকার বরিশাল বিভাগের অংশে ২০ নম্বর পৃষ্ঠার ৫৮ নম্বর সিরিয়ালে নাম রয়েছে আবদুল হাই সেরনিয়াবাতের। বঙ্গবন্ধুর বোন আমিনা বেগমের স্বামী সাবেক কৃষিমন্ত্রী শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের বড় ভাই এই আব্দুল হাই সেরনিয়াবাত।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কাল রাতে ঢাকার মিন্টো রোডে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের বাসভবনে আবুদল হাই সেরনিয়াবাতের ছেলে শহীদ সেরনিয়াবাত নির্মমভাবে হত্যার শিকার হন।
এদিকে আব্দুল হাই সেরনিয়াবাতের স্বজনরা জানান, ১৯৭১ সালে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন আব্দুল হাই সেরনিয়াবাত। ১৯৭১ সালে তখন তার বয়স ষাটের ওপরে থাকলেও স্বপ্ন দেখতেন স্বাধীন দেশের। তার দোনালা বন্দুকটি স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের দিয়ে দেন।
আব্দুল হাই সেরনিয়াবাতের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা সামসুল ইসলাম (আমান সেরনিয়াবাত) বলেন, আমাদের সেরনিয়াবাত পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যই মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহন করেন। কিন্তু কিভাবে আমার বাবার নাম এই তালিকাভুক্ত হলো, এটা কল্পনাও করতে পারছি না। যে ঘটনার নিন্দা জানানোর ভাষাও হারিয়ে ফেলেছি আমরা।
পরিবারের অন্য সদস্যরা বলছেন, যার ৪ সন্তান মুক্তিযোদ্ধা তার নাম এ তালিকায় দেখে শুধু অবাকই নন, মর্মাহত ও ক্ষুব্দ হয়েছেন সকলে। সরকারকে বিব্রত করতে কিংবা তালিকাটি প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এমনটা করা হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখার আহবান তাদের।
আবদুল হাই সেরনিয়াবাত কোনোভাবেই মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কাজে জড়িত ছিলেন না বলে জানিয়ে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এ. এম. জি কবির ভুলু বলেন, তার নাম রাজাকারদের প্রকাশিত তালিকায় থাকাটা খুবই দুঃখজনক। আর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বরিশাল মহানগর ইউনিটের কমান্ডার মোকলেছুর রহমান বলেন, আমরা যে তালিকা দিয়েছিলাম, তা প্রকাশিত হয়নি।
মুক্তিযোদ্ধা এনায়েত হোসেন চৌধুরী বলেন, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে রাজাকারের তালিকা চাওয়া হয়েছিল। তারপর প্রকৃত রাজাকারের নামের তালিকা পাঠানো হয়েছে মন্ত্রণালয়ে । তবে রাজাকারের তালিকায় বরিশালের যেসব মুক্তিযোদ্ধাদের নাম এসেছে তা পাঠানো রাজাকারের তালিকায় ছিল না।